সেরা ৬টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস সম্পর্কে জানুন

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস – বর্তমানে খুব কম মানুষ আছে যারা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করেন না। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কম দামের মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড ফোন পাওয়ায় প্রায় সকলের কাছেই এখন অ্যান্ড্রয়েড ফোন পাওয়া যায়।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল যত বেশি পুরনো হয় ততো বেশি পরিমানে ধীরগতির হতে শুরু করে। কিন্তু আপনি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস জেনে নিয়ে আপনার ধীরগতির স্মার্টফোন কে আরো বেশি ফাস্ট করতে পারবেন।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সকলে ব্যবহার করলেও অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস সম্পর্কে আমরা অনেক কম জানি। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস সম্পর্কে। যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য জেনে নেয়া উচিৎ।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস আর্টিকেলে নিচে আমরা সেরা ০৬ টি টিপস সম্পর্কে জানাবো –

১. ফোনের চার্জ দ্রুত শেষ হলে করণীয়

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস সম্পর্কে বলতে হলে সবার প্রথমে স্মার্টফোনের চার্জিং টি নিয়ে কথা বলতে হয়। ফোনের বয়স বাড়ার সাথে সাথে চার্জিং ক্ষমতা কমতে থাকে। আপনার স্মার্টফোনের চার্জ যদি দ্রুত শেষ হয়ে যায় তবে এই অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস টি আপনার জন্য।

মোবাইলের চার্জ কমতে থাকে সাধারণত ফোনেত ডিসপ্লে রিফ্রেস রেট ও ব্যাকগ্রাউন্ড চলা অ্যাপ এর মাধ্যমে। বর্তমান ফোন গুলোতে দেখা যায় ৯০-১২০ রিফ্রেস রেট ব্যবহার করা হয়। যেটা সবচেয়ে সুবিধার তবে চার্জ খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়।

যদি স্মার্টফোনে চার্জ ধরে রাখতে চান তাহলে স্ক্রিন রিফ্রেশ রেট ৬০ এর অধিক দিবেন না। এর ফলে আপনার ফোনের চার্জ দীর্ঘসময় ধরে থাকবে। মোবাইল এর রিসেন্ট অ্যাপ গুলো সবসময় বন্ধ করে রাখুন। তাহলে আপনার ফোনে পূর্বের তূলনায় অধিক সময় চার্জ থাকবে।

২. এন্ড্রয়েড মোবাইল গরম হলে করণীয়

মোবাইল অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া বর্তমানে সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা। মোবাইল ফোন গরম হওয়ার জন্য অনেক গুলো কারণ থাকতে হয়। যদি আপনার ফোন টি গেম খেলার কারণে অধিক গরম হয় তাহলে গ্রাফিক্স রেজুলেশন একদম কমিয়ে রাখুন।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস গুলোর মধ্যে ফোন ঠান্ডা রাখার উপায় হলো অতিরিক্ত পরিমানে মোবাইল ব্যবহার না করা। স্মার্টফোন চার্জ থাকা অবস্থায় ব্যবহার করবেন না। কোনো প্রকার ফোন ব্যবহার ছাড়াই যদি ফোন গরম হতে থাকে তাহলে ফোনের প্রসেসর টি পরিবর্তন করে নিতে হবে।

৩. রাতের বেলা দিনের মতো ছবি তুলুন

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা একটি টিপস এটি। বর্তমানে সবচেয়ে ভাইরাল একটি টপিক এটা। আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলের মাধ্যমে রাতের বেলাতে ও দিনের মতো ছবি তুলতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে ডিএসএল আর এর মতো ছবি হবে।

রাতের ছবি ও দিনের মতো করার জন্য আপনাকে একটি অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। অ্যাপ টির নাম হলো – Gcam. এটা আপনার ফোনের মডেল অনুযায়ী ডাউনলোড করে ইন্সটল করতে হবে।

কিছু ফোনে এটা সাপোর্ট না ও করতে পারে। আপনার ফোনের নাম ও মডেল নাম্বার লিখে গুগলে সার্চ করুন GCAM সাপোর্ট করবে কি না। যদি সাপোর্টেড হয় তাহলে গুগলের মাধ্যমেই আপনি Gcam ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।

৪. এন্ড্রয়েড মোবাইল রুট

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি টিপস হলো মোবাইল রুট করা। মোবাইলে রুট করা থাকলে আপনি অনেক ধরণের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বিশেষ করে, আপনার ফোনেত স্টক রম পরিবর্তন করতে পারবেন।

এ ছাড়াও অনেক ধরণের অ্যাপ ব্যবহার করতে রুট ফোনের প্রয়োজন পরে। আপনি যদি আপনার স্মার্টফোন কে রুট করতে চান তাহলে “Kingoroot” অ্যাপলিকেশন দিয়ে করতে পারবেন। তবে সকল ফোনে অ্যাপ দিয়ে রুট করতে পারবেন না, এ ক্ষেত্রে আপনাকে কম্পিউটার ব্যবহার করে করতে হবে।

৫. এন্ড্রয়েড ফোন দিয়ে কম্পিউটার কন্ট্রোল

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস গুলোর মধ্যে বেশ কাজের একটি টিপস এটি। আপনার কম্পিউটার যেখানে থাকুক না কেন একটি অ্যাপ ব্যবহার করে আপনার কম্পিউটার কে পৃথিবীর যে কোনো স্থান থেকে শুধু মাত্র আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইল দিয়ে কন্ট্রোল করতে পারবেন।

এর জন্য প্লে স্টোর থেকে “Anydesk” সফটওয়্যার টি আপনার ফোনে ইন্সটল করতে হবে। আপনি যে পিসি এর সাথে কানেক্ট করবেন সেখানেও “Anydesk” সফটওয়্যার টি ইন্সটল থাকতে হবে। অ্যাপ ওপেন করলে একটি এড্রেস দেখতে পাবেন।

আপনি যদি কম্পিউটার থেকে মোবাইল কন্ট্রোল করতে চান তাহলে কম্পিউটার থেকে “Remote Address” এ মোবাইলের এড্রেস টি লিখতে হবে, যদি মোবাইল থেকে কম্পিউটার কন্ট্রোল করতে চান তাহলে কম্পিউটার এর এড্রেস টি লিখে কানেক্ট করলে হয়ে যাবে। তবে, অবশ্যই ইন্টারনেট স্পিড ভালো থাকতে হবে।

৬. মোবাইলে মাউস, কি-বোর্ড ব্যবহার করুন

মোবাইল দিয়ে কম্পিউটার এর মতো মাউস ও কিবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন। অনেকেই টাইপিং শিখতে চান তবে কম্পিউটার নেই। কিন্তু আপনি চাইলেই আপনার ফোন দিয়ে এ কাজ টি করতে পারবেন। এর জন্য আপনার দরকার হবে –

প্রথমে, দেখে নিন যে আপনার ফোন টি OTG সাপোর্টেড কি না। যদি সাপোর্টেড হয় তাহলে OTG ক্যাবল লাগিয়েন নিন। এর পরে USB hub টি তে মাইস ও কিবোর্ড যুক্ত করলেই কম্পিউটার এর মতো ব্যবহার করতে পারবেন।

স্মার্টফোন কে আবিস্কার করেন

বর্তমানে সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। কিন্তু বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন কে আবিস্কার করেন? সেটা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। স্মার্টফোনের আবিস্কার এর স্থানে নিকোলা টেসলা এর কোনো নাম না থাকলেও তার অবদান ছিল ব্যাপক।

প্রথম দিয়ে সর্বপ্রথম ওয়্যারলেস কমিউনিকেসন ভয়েস সিস্টেম সম্পর্কে মত প্রকাশ করেন নিকোলা টেসলা। তবে এটা তখন বেশিদূর আগাতে পারেনি। কিন্তু নিকোলা টেসলা এর গবেষণার মাধ্যমেই পরবর্তী তে মোবাইল ফোন আবিস্কার হয়।

১৯৭৩ সালে “মার্টিন কুপার” প্রথম মোবাইল ফোন আবিস্কার এর রেকর্ড করেন। তিনি মটোরোলা কোম্পানির একজন গবেষক ছিলেন। তবে মার্টিন কুপারের পূর্বেও ১৯৬০ সালে মটোরোলা একটি পোর্টেবল কার ফোন আবিস্কার করেন তবে সেটার জনপ্রিয়তা ছিল খুব এই কম।

অনেকটা একই ডিজাইনে পরবর্তী তে যখন ছোট করে মার্টিন কুপার ফোন টি তৈরি করে তখন বিশ্বব্যাপী অনেক বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাই ধরা হয় যে, প্রথম মোবাইল ফোন আবিস্কারের রেকর্ড টি “মার্টিন কুপার” এর।

সবচেয়ে কম দামে স্মার্টফোন

সবচেয়ে কম দামের মধ্যে যদি আপনি স্মার্টফোন খুজে থাকেন তাহলে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস আর্টিকেলের এ অংশে জানাবো। সবচেয়ে কম দামের স্মার্টফোন তৈরি করে দেশের মধ্যে ওয়ালটন কোম্পানি। ওয়ালটন কোম্পানি এর ফোন গুলো আমাদের দেশে তৈরি হয়।

এর ফলে অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা ফোনের তুলনায় দাম অনেক বেশি কম হয়। আপনি যদি কম দামের মধ্যে স্মার্টফোন ক্রয় করতে চান তবে ওয়ালটনের যে কোনো ফোন দেখে আপনার বাজেট অনুযায়ী ক্রয় করতে পারেন।

স্মার্টফোনের ক্ষতিকর প্রভাব

স্মার্টফোন আমাদের জীবনযাত্রার মান সহজ করলেও আমাদের জীবনে ফেলছে ক্ষতিকর প্রভাব। দীর্ঘদিন স্মার্টফোন ব্যবহার এর ফলে তৈরি করে শরিরে নানারকম স্বাস্থ্য ঝুকি।

অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার এর কারণে মানুষিক ভাবে বিষন্নতা বৃদ্ধি পায়। একদিকে এমন স্মার্টফোনের আসক্তির ফলে প্রচুর পরিমানে সমহ অপচয় হয় অন্য দিকে এটা মানুষিক সুস্থতা নস্ট করে দেয়।

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস আর্টিকেলের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর একটি টিপস হলো – আপনারা প্রয়োজন ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহার কখনো করবেন না। অসুস্থ বিনোদনের জন্য নিজের মানুষিক সুস্থতা কে নস্ট করতে দিবেন না।

ভালো স্মার্টফোন চেনার উপায়

ভালো স্মার্টফোন সকলেই ক্রয় করতে চান। তবে অনেকেই অভিজ্ঞতার অভাবে বা ভালো স্মার্টফোন চেনার উপায় না জানার ফলে ভালো মোবাইল ক্রয় করতে পারেন না। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস আর্টিকেলের এ অংশে আমরা আলোচনা করবো ভালো স্মার্টফোন চেনার উপায় গুলো নিয়ে –

ব্রান্ড – ভালো স্মার্টফোন এর জন্য ব্রান্ড দেখাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ভালো মানের ব্রান্ড গুলো সস্তা স্মার্টফোন কখনো তৈরি করবে না। দামের দিকে কিছুটা বেশি হলেও ভালো স্মার্টফোন কিনতে চাইলে অবশ্যই ভালো একটি ব্রান্ড এর ফোন বাছাই কর‍তে হবে।

ডিসপ্লে – ভালো একটি স্মার্টফোনে অবশ্যই ভালো ডিসপ্লে দেয়া থাকবে। যেখানে আপনি ভালো পরিমান স্ক্রিন রিফ্রেস রেট পাবেন। যার ফলে আপনি ল্যাগ ছাড়া ব্যবহার করতে পারবেন। এইচডি+ কোয়ালিটি ডিসল্পে তে ভিডিও দেখতে শান্তি পাবেন।

পারফরম্যান্স – ভালো স্মার্টফোন চেনার উপায় গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ফোনের পারফরম্যান্স। ফোনের পারফরম্যান্স কেমন পাবেন এটা নির্ভর করে ফোনের র‍্যাম, রম ও প্রসেসর এর উপরে। আপনি যদি ভালো মানের প্রসেসর বেছে নিতে পারেন তবে অবশ্যই ফোন টি ভালো হবে। প্রসেসর এর অনেক ভিন্নতা আছে যা নিয়ে পরে কোনো আর্টিকেলে লিখব। তবে ভালো ফোন বাছাই এর সময় এগুলো অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।

ব্যাটারি ও চার্জ – ভালো স্মার্টফোন অবশ্যই ভালো মানের ব্যাটারি থাকবে এটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। ভালো ফোন গুলোর ব্যাটারি সাধারণত ৫০০০ এম এ এইচ এর অধিক হয়। সাথে ১৫ ওয়াট এর বেশি চার্জিং স্পিড দেয়া হয়।

স্মার্টফোনের দাম – অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস এর মধ্যে ভালো স্মার্টফোন চেনার জন্য মোবাইলের দাম অন্যতম। ভালো স্মার্টফোন গুলোর দাম একটু বেশি হয়। সস্তা ফোন গুলো সাধারণত কিছুদিন ব্যবহার এর পরে স্লো হতে শুরু করে। এ ক্ষেত্রে স্মার্ট ফোন কেনার পূর্বে দামের ব্যাপার টি মাথায় রাখতে হবে।

অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন আপডেট

এন্ড্রয়েড এর ভার্সন যত বেশি হয় ততো বেশি সুবিধা পাওয়া যায়। বর্তমানে আপনি স্মার্টফোনের অফিসিয়াল আপডেট ছাড়া এন্ড্রয়েড ভার্সন আপডেট করতে পারবেন শুধু মাত্র রুট করা ফোনে। এ ছাড়া অফিসিয়াল ভাবে আপডেট করতে হবে।

বর্তমানে এন্ড্রয়েড এর ভার্সন চলছে এন্ড্রয়েড ১৩. আপনার ফোন টি যদি পূর্বের হয়ে থাকে তাহলে ফোন টি রুটেড করে ভার্সন আপগ্রেড করতে পারবেন। তবে, এ ক্ষেত্রে আপনার ফোন টি একেবারে ব্রিক (ফোনের কার্যক্রম অফ) হতে পারে।

এন্ড্রয়েড সংজ্ঞায়িত করুন

এন্ড্রয়েড ফোন কে আরো দ্রুত ও বিভিন্ন ধররনের বাগ ফিক্স করার জন্য প্রতিনিয়ত মোবাইল কে আপডেট রাখতে হয়, এগুলোকে সাধারণত সফটওয়্যার আপডেট বলা হয়।

প্রতিটি মোবাইলের সাথে স্টক রম দেয়া থাকে। এখানে আপনার মোবাইলের লাঞ্চার সহ যাবতীয় সকল কিছু থাকে। কোনো প্রকার সমস্যা থাকলে ফোন টি লেটেস্ট ভাবে আপডেট করে নিন ফোনের সফটওয়্যার আপডেট অপশন থেকে।

আমাদের শেষ কথা

অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল টিপস – আর্টিকেলে আমরা মোবাইল সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও টিপস শেয়ার করলাম। এখানে দেয়া টিপস গুলো দিয়ে আপনার ফোন কে অসাধারণ কার্যক্ষম করে তুলতে পারবেন। যদি আর্টিকেল টি আপনার ভালো লাগে শেয়ার করতে ভুলবেন না, ধন্যবাদ।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন। আমাদের ফেসবুক পেইজ এ লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন

Leave a Comment